Ads

SEARCH

Friday, 26 March 2021

মাথাব্যথা দূর করার প্রাকৃতিক উপায়

 A painful sensation in any part of the head, ranging from sharp to dull, that may occur with other symptoms.


মাথাব্যথা

https://www.myupchar.com/bn/disease/headache


প্রতিদিনের যে সমস্যাটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে তার নাম মাথাব্যথা।

ছোট-বড় প্রায় সবাই নানা কারণে বিভিন্ন সময়ে মাথাব্যথায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন। অনেকেই আবার ভুগে থাকেন মাইগ্রেনের সমস্যায়।

এ ধরনের ব্যথা হঠাৎই শুরু হয়ে যায় এবং ৩-৪ দিন পর্যন্ত টানা ব্যথা চলতে থাকে।

ব্যথা দূর করার জন্য অনেকেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন, অনেকে আবার ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে থাকেন। কিন্তু আপনি জানেন কি? খুব সহজে কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে এ মাথাব্যথার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। চলুন তবে দেখে নেয়া যাক সেই উপায়গুলো কী কী।

আদা ও আদা চা

মাথাব্যথা উপশমে আদার জুড়ি নেই। কারণ আদায় রয়েছে ‘প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন সিনথেসিস’ যা অ্যাসপিরিন যা ব্যথানাশক ওষুধে ব্যবহার করা হয়। তাই মাথাব্যথা শুরু হলে সামান্য আদা ছিলে নিয়ে চিবানো শুরু করুন। এতে মাথাব্যথা দ্রুত উপশম হবে। এর পাশাপাশি এক কাপ পানি ফুটিয়ে এতে আদা সামান্য ছেঁচে নিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে সামান্য মধু দিয়ে পান করতে পারেন আদা চা। এতেও মাথাব্যথা দ্রুত দূর হবে।

আইসব্যাগ

বাজারে নানা আকারের অনেক আইসব্যাগ কিনতে পাওয়া যায়। একটি আইসব্যাগে বরফ ভরে নিয়ে তা মাথার ওপরে অর্থাৎ ঠিক মাথার তালুতে খানিকক্ষণ ধরে রাখুন। দেখবেন মাথাব্যথা উপশম হচ্ছে। তবে যাদের হুটহাট ঠাণ্ডা লেগে যাওয়ার প্রবণতা আছে তারা এ পদ্ধতি পালন করবেন না।

মিষ্টি কুমড়ার বিচি খান

মিষ্টি কুমড়ার বিচি ভেজে খেলে মাথাব্যথার সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কারণ মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে হয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম সালফেট যা মাথাব্যথা উপশমে কাজ করে থাকে।

কাঠবাদাম খাওয়ার অভ্যাস রাখুন

অনেক সময় আবহাওয়া, ধুলোবালির কারণে মাথাব্যথা শুরু হয়ে যায়, আবার অনেক সময় মানসিক চাপের কারণেও মাথাব্যথা শুরু হয়। এসব ধরনের ব্যথা কমানোর জন্য একমুঠো বা দুইমুঠো কাঠবাদাম চিবিয়ে খান। কাঠবাদামে রয়েছে ‘স্যালিসিন’ যা ম্যথাব্যথা উপশমে কাজ করে রবং দ্রুত ব্যথা নিরাময় করে।

মনোযোগ দিয়ে গান শুনুন

মন ভালো করার পাশাপাশি মাথাব্যথা উপশমে সব চেয়ে ভালো কাজ হচ্ছে গান শোনা। ‘জার্নাল অফ পেইন’ গবেষণাপত্রে প্রকাশ হয় গান শোনা প্রায় ১৭% ব্যথা কমিয়ে দিতে সহায়তা করে। কারণ গান মনোযোগ দিয়ে শোনার সময় আমাদের লক্ষ্য মাথাব্যথা থেকে সরে যায় যা আমাদের মাথাব্যথার কথা অনেক সময় ভুলিয়ে দেয়। এতে করেই সেরে উঠে মাথাব্যথা।


মাথাব্যথা মানেই মাইগ্রেন নয়

‘প্রায়ই মাথাব্যথা হয়। আমার বোধ হয় মাইগ্রেন আছে।’—এমন ধারণা অনেকেরই আছে। কিন্তু সব মাথাব্যথাই মাইগ্রেন নয়। মাইগ্রেন হলো একটি ভিন্ন ধরনের মাথাব্যথা। মেয়েদের মধ্যে এ রোগ বেশি দেখা যায়।
কেন হয় মাইগ্রেন
মাথায় রক্ত চলাচলের তারতম্যের কারণে মাইগ্রেন হয়। কিছু কিছু বিষয় মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে। যেমন চকলেট, পনির, কফি ইত্যাদি বেশি খাওয়া, জন্মবিরতিকরণ ওষুধ সেবন, দুশ্চিন্তা করা, ভ্রমণ, নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম ইত্যাদি।

কীভাবে বুঝবেন মাইগ্রেন
মাথাব্যথা ও বমি ভাব এ রোগের প্রধান লক্ষণ। মাথাব্যথা শুরুর আগে হাই তোলা, কাজে মনোযোগ নষ্ট হওয়া, বিরক্তিবোধ করা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। মাথার যেকোনো অংশ থেকে ব্যথা শুরু হয় এবং পরে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। চোখের পেছনে ব্যথা হতে পারে। বমি বা বমি ভাব থাকে। এ ছাড়া ক্লাসিক্যাল মাইগ্রেন হলে দেখতে সমস্যা—যেমন চোখে উজ্জ্বল আলোর অনুভূতি, হঠাৎ অন্ধকার হয়ে যাওয়া, দৃষ্টিসীমানা সরু হয়ে আসা অথবা যেকোনো এক পাশ অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ হতে পারে। ২০ মিনিট স্থায়ী এসব উপসর্গের পর বমি ভাব এবং মাথাব্যথা শুরু হয়, যা সাধারণত এক পাশে হয়। দৃষ্টির সমস্যা এক ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হলে ধরে নিতে হবে, এটি মাইগ্রেন নয়।

মাইগ্রেন হলে করণীয়
যাদের মাইগ্রেন আছে, তাদের ভালো ঘুম নিশ্চিত করা দরকার। প্রতিদিন অন্তত আট ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। যেসব খাবার খেলে ব্যথা শুরু হতে পারে—যেমন কফি, চকলেট, পনির, আইসক্রিম, অ্যালকোহল ইত্যাদি বাদ দিতে হবে। বেশি সময় না খেয়ে থাকা যাবে না। জন্মবিরতিকরণ ওষুধ সেবন না করাই শ্রেয়। প্রয়োজনে অন্য পদ্ধতি বেছে নেওয়া যেতে পারে। পরিশ্রম, মানসিক চাপ ও দীর্ঘ ভ্রমণ বর্জনের মাধ্যমে মাইগ্রেন অনেকাংশে কমিয়ে আনা যায়।

চিকিৎসা
মাইগ্রেনের আক্রমণ কমানোর, মাথাব্যথা ও বমি ভাব উপশমের জন্য কিছু কার্যকর ওষুধ রয়েছে, যেগুলো চিকিৎসকের পরামর্শে সেবন করা উচিত। সবচেয়ে বড় কথা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রেই বারবার মাইগ্রেনের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। মনে রাখবেন, সব মাথাব্যথাই মাইগ্রেন নয়; দৃষ্টিস্বল্পতা, উচ্চ রক্তচাপ, সাইনোসাইটিস, দাঁতের সমস্যা, মস্তিষ্কের টিউমার ও রক্তক্ষরণসহ নানাবিধ কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। বারবার বা দীর্ঘমেয়াদি মাথাব্যথায় না বুঝে ওষুধ খাবেন না। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটাল